চারবার স্ট্রোক ও শরীরের বাঁ পাশ অবশ গান ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেছেন রিংকু

বিনোদন প্রতিবেদক: ‘ক্লোজআপ ওয়ান’খ্যাত তারকা মশিউর রহমান রিংকু। সংগীত ভুবনে জনপ্রিয় একটি নাম। ফোক, বাউল, মরমি ও সুফি ঘরানার গানের শিল্পী হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি। গানে স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করেছেন এই শিল্পী। তার গাওয়া অনেক মৌলিক গানই জনপ্রিয় হয়েছে। রাজধানীর মগবাজারে ‘সম্পর্ক’ নামে রিংকুর একটি স্টুডিও ছিল। গানের ব্যস্ততার কারণে রিংকুর যখন দম ফেলার উপায় ছিল না, ঠিক তখনই তার জীবনে নেমে আসে ঝড়। রিংকুর সংসার ভাঙনের পরই বদলে যেতে থাকে তার জীবনের গতিপথ। ধীরে ধীরে তার শরীরে বাসা বাঁধতে থাকে নানা রোগ। একে একে চারবার স্ট্রোক হয় তার। আস্তে আস্তে ছিটকে পড়েন গান থেকে। অসুস্থতার কারণে গানকে বিদায় জানিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হন রিংকু।

জানা গেছে, বর্তমানে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বড় সাওতায় বসবাস করছেন এই গায়ক। আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ। তবে তার হাঁটাচলা ও কথা বলা এখনো স্বাভাবিক না। সর্বশেষ ২০২০ সালে দুবার স্ট্রোক হওয়ায় তার শরীরের বাঁ পাশ অবশ হয়ে গেছে।

রিংকুর পারিবারিক এক ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন, সুস্থ হয়ে রিংকু আবার গানে ফিরতে চান। গানের প্রতি এখনো তার ভালোবাসা ও আবেগ বিন্দুমাত্র কমেনি।

যদি তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো যেত, তাহলে সুস্থ হয়ে উঠতেন এই গায়ক।

সম্প্রতি রিংকু এক গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘একটা সময় স্টেজ মাতিয়েছি। নতুন নতুন গান করেছি। কিন্তু এখন সব বন্ধ। আমাকে অনেকেই ডাকেন গানের জন্য। কিন্তু এ অবস্থায় গাইতে পারি না, তাই যাই না। আমি যে গানগুলো গেয়েছি, আমার কণ্ঠের গান যারা পছন্দ করেন- তারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে আগের মতো গাইতে পারি। কিন্তু আগের মতো গাওয়া সম্ভব নয়, তার পরও চেষ্টা করব।’

২০১৬ সালে ইতালিতে শো করার সময় প্রথমবার স্ট্রোক করেন রিংকু। এরপর দেশে এসে চিকিৎসা নিয়ে গানে ফেরেন। কিন্তু ২০১৮ সালে আবারও স্ট্রোক করেন। এরপর ২০২০ সালে পরপর দুবার স্ট্রোক করার কারণে গান থেকে দূরে আছেন এই সংগীতশিল্পী।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে গানের রিয়েলিটি শো ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে শ্রোতামহলের নজর কাড়েন রিংকু। সেবার ওই প্রতিযোগিতায় তিনি জায়গা করে নেন সেরা পাঁচে। তার কণ্ঠে লোকগান ও বাউল গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্টেজ শো ও অ্যালবাম প্রকাশে। ‘পাগলা ঘণ্টা’, ‘বাউল মন’ ও ‘জগৎ বন্ধু’ নামের তিনটি অডিও অ্যালবাম বের করেছিলেন তিনি। তার ‘বাউল মন’ অ্যালবামের ‘নারী হয় লজ্জাতে লাল’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।