চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাসপাতালে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে শিশু চুরির চেষ্টা, যুবক আটক

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন এক শিশুকে চুরি অভিযোগে আশিক আলী (২৬) নামে এক যুবককে আটক করেছে রোগীর স্বজনরা। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে জেলা হাসপাতালের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আটক আশিক আলী জেলা শহরের পিয়ারাপুর মহল্লার আসলাম আলীর ছেলে।
শিশুর পরিবার, হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের দাঁড়াবাজ গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী পপিয়ারা খাতুন। এ সময় চিকিৎসাধীন অসুস্থ ছেলে মেহেদী হাসানকে (৭) চুরি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে আটক যুবক। এ সময় মা পপিয়ারার চিৎকারে আশপাশের রোগীর স্বজনরা ছুটে আসে এবং আশিক আলীকে আটক করে।
শিশুর মা পপিয়ারা খাতুন বলেন, ‘ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আমিও ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে ছেলের এক পা আমার শরীরে লাগলে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি আমার ছেলেকে এক হাত ও এক পা ধরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে অপরিচিত এক ব্যক্তি। এ সময় চোর চোর বলে চিৎকার করলে আশপাশের রোগীর স্বজনরা তিন তলা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে নিচতলার ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে থেকে চোরকে আটক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।’
ওই শিশুর বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রীর গায়ে ছেলের পা লেগে ঘুম না ভাঙলে ছেলেকে চুরি করে নিয়ে কোথায় যেত এটা ভাবলেও ভয় লাগছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি করছি। আর কখনও কেউ যাতে এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করতে সাহস না পায়, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: মুগদা হাসপাতালে গভীর রাতে ঘুমন্ত মায়ের কোল থেকে শিশু চুরি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুর মায়ের চিৎকারে হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি বাচ্চাকে কোলে তুলে পালাচ্ছে। এমন অবস্থায় তাকে ধরতে ধাওয়া করলে কিছুদূর পরে বাচ্চা ফেলে দৌড়ে পালাতে থাকে শিশু চোর আশিক আলী। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তি দৌড়ে গিয়ে নিচতলায় তাকে আটক করি। তিন তলায় শিশু ওয়ার্ডে অন্ধকার থাকায় শিশু চুরির মতো ঘটনা ঘটতে পারে।’
এদিকে, চুরির অভিযোগে আটক আশিক আলী বলেন, ‘কাশির সিরাপ খেয়ে অবচেতন অবস্থায় কি করেছি কিছুই জানি না। তবে আশিকের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ করেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনরা।’
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রইস উদ্দিন জানান, রাতেই খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিতে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় শিশু মেহেদী হাসান। সে চৌডালা নূরানি মাদ্রাসার নার্সারিতে পড়াশোনা করে।